মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:০৬ পূর্বাহ্ন

কুড়িগ্রামে পানি কমলেও কমেনি দুর্ভোগ

নয়ন দাস ।। কুড়িগ্রামনিউজ২৪.কম / ১৯১ Time View
Update : শনিবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

কুড়িগ্রামে গত এক সপ্তাহ ধরে ধরলা, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার ও তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ৭ হাজার পরিবার। পানি কিছুটা কমতে শুরু করলেও রাস্তাঘাট তলিয়ে যাতায়াত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন এলাকাকবাসী। গবাদি পশু নিয়ে অনেকে সরকারি আশ্রয়কেন্দ্র ও উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।
এদিকে জেলায় ৫ হাজার ৬৮৩ হেক্টর জমির আমন ক্ষেত তলিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন কৃষকরা। অপরদিকে নদীভাঙনের মুখে পড়ে ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন অনেকে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টায় ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার ও দুধকুমার নদের পানি ১৩২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্র নদের চিলামারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মুসার চরের মতিয়ার রহমান বলেন, ছেলে-মেয়ে নিয়ে গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে খুব মসিবতে আছি। চারদিকে পানি, বের হওয়ার উপায় নাই। খাটের উপর মাঁচা করে রান্না করে খাচ্ছি। একবেলা রান্না করে দু’বেলা খাওয়া ছাড়া উপায় নাই। এ মুহূর্তে আমরা শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি সংকটে ভুগছি।
একই এলাকার আছমা বেগম বলেন, ঘরে চাল আছে কিন্তু রান্না করার উপায় নাই। একবেলা ভাত রান্না করে তিনবেলা খাচ্ছি। পানিতে হাঁটাচলা করে সংসারের কাজ করতে গিয়ে হাত পায়ে ঘাঁ হচ্ছে। আমাদের খুব কষ্ট হচ্ছে।
চিলমারীর শাখাতি ও নয়ারহাট গ্রামের মো. আক্কাস আলী ও রহুল আমীন বলেন, গত এক সপ্তাহে আমাদের গ্রামে প্রায় ৫০-৬০টি ঘর-বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। চারপাশে পানি। বর্তমানে খোলা আকাশের নিচে আছি। বৃষ্টি হলে আমাদের খুব কষ্ট হয়।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, উজানের ঢল আর বৃষ্টির পানিতে জেলায় প্রায় ৫ হাজার ৬৮৩ হেক্টর জমির আমন ধানক্ষেত তলিয়ে নষ্ট হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা প্রস্তুতের কাজ চলছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, কুড়িগ্রামের সবগুলো নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা নেই, ফলে জেলার বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হবে।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, বানভাসী মানুষের জন্য জেলা ও উপজেলা প্রশাসনে যথেষ্ট বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এরইমধ্যে সেগুলো বিতরণের কাজ চলছে। বানভাসীদের দুর্ভোগ কমাতে জেলায় ১৮টি স্থায়ী ও ৩৬১টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।


এই বিভাগের আরও খবর
@Site Developed by- NB ALI, Ansari IT
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। কুড়িগ্রামনিউজ২৪.কম- এ প্রকাশিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র ও অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি।