কুড়িগ্রামের উলিপুরে আদালত থেকে স্বাক্ষী দিয়ে ফেরার পথে ভাতিজা কর্তৃক চাচাকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) উলিপুর থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়, এবং অপহরণের সঙ্গে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসসহ এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটে বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) কুড়িগ্রাম থেকে উলিপুর ফেরার পথে, উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের পাঁচপীর হালা বটতলা এলাকায়।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ধরনীবাড়ী ইউনিয়নের আলসিয়া শেখের ছেলে আব্দুর রহমান (ভক্ত বাঁশিয়াল) (৬৫) এবং তার ভাতিজা ফুল মিয়া (৪০) এর মধ্যে জমি-জমা নিয়ে বিরোধ চলছিল। এতে একটি মামলা বিচারাধীন। ফুল মিয়া আব্দুর রহমানকে বিভিন্ন সময়ে মামলা তুলে নেয়ার জন্য ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছিলেন।
বুধবার, আব্দুর রহমান এবং তার জামাতা জহুরুল হক (৪৫) উলিপুর আদালতে মামলার স্বাক্ষী দিতে গিয়েছিলেন। আদালত থেকে ফেরার পথে তারা দুজন অটোরিক্সায় কুড়িগ্রাম থেকে উলিপুরের দিকে যাচ্ছিলেন, এমন সময় ফুল মিয়া এবং তার লোকজন একটি মাইক্রোবাস (ঢাকা মেট্রো-চ-১১-৮৬১৯) দিয়ে তাদের গতিরোধ করেন।
এ সময় ফুল মিয়া চাচা আব্দুর রহমানকে অটোরিক্সা থেকে নামিয়ে মাইক্রোবাসে তুলে অপহরণের উদ্দেশ্যে মারপিট করেন। জামাতা জহুরুল হক বিষয়টি তার আত্মীয়-স্বজনদের জানান, এবং পরে স্থানীয়দের সহায়তায় বিকালে মাইক্রোবাসটি আটক করা হয়।
ফুল মিয়া ও তার সঙ্গীরা পালিয়ে গেলেও, মাইক্রোবাসের চালক মনজুরুল হক (৪৮) কে আটক করে পুলিশ। আব্দুর রহমানের অবস্থার অবনতি হলে তাকে উলিপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় এবং পরে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়।
আব্দুর রহমানের মেয়ে আরজিনা বেগম (৪০) বলেন, "আমাদের কোনো ভাই নেই, আমরা তিন বোন। আমাদের জমি দখল করার জন্য ফুল মিয়া দীর্ঘদিন ধরে আমার বাবা আব্দুর রহমানকে হুমকি দিয়ে আসছিল।" তিনি দাবি করেন, "ফুল মিয়া আমাদের জমি দখল করার জন্য পিতাকে অপহরণ করেছে, এবং আমরা তার বিরুদ্ধে সুষ্ঠু বিচার চাই।"
এ ঘটনায় আব্দুর রহমানের জামাতা জহুরুল হক বাদী হয়ে ফুল মিয়া এবং মাইক্রোবাসের চালক মনজুরুল হকসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও চারজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।
উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জিল্লুর রহমান জানান, "আটক মাইক্রোবাস চালক মনজুরুল হককে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।"