কুড়িগ্রামের উলিপুরে তিস্তা নদির অব্যাহত ভয়াবহ ভাঙনে বিলিন হয়ে যাচ্ছে শতাধিক বাড়ি ঘর। ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে প্রায় ১শ টি পরিবারের লোকজন। পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে যেন রাক্ষসী রুপ নিয়েছে তিস্তা। নিমিশেই গিলে খাচ্ছে ক্ষুধার্ত বাঘের মতো একরকে একর ফসলি জমি। বছরের পর বছর এভাবে ভাঙনের শিকার হয়ে বসতবাড়ি ও আবাদি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন মানুষ। চোখের সামনেই ভেসে যাচ্ছে বাড়ি ঘর। সরানোর সময় নেই, তছনছ হয়ে যাচ্ছে সাজানো গোছানো সুখের সংসার। ভাঙ্গনের আওয়াজে থেমে থেমে কেঁপে উঠছে তিস্তার পাড়। চোখের জলে ভাসছে তাদের বুক।
মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার বজরা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর ভাঙন কবলিত পশ্চিম বজরা, সাদুয়া দামার হাট, সাতালস্কর, কালপানি বজরা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষজন তাদের শেষ সম্বল ঘর-বাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে পাশর্বর্তি এলাকার উচু স্থানে সরিয়ে নিচ্ছেন।
পশ্চিম বজরা গ্রামের বাসিন্দা মোজাম্মেল হক (৫৫), রোস্তম আলী (৬০), সাইফুল ইসলাম (৫০), গোলাম রব্বানী (৬০) সহ ভুক্তভোগী অনেকেই জানান, গত বছর থেকে এসব এলাকায় ভাঙন শুরু হলেও কর্তৃপক্ষ ভাঙন রোধে কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় এ বছর ভাঙনের তীব্রতা বেড়ে গেছে। গত একমাসের ব্যবধানে ২ শতাধিক পরিবার বসতবাড়িসহ আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে কমিউনিটি ক্লিনিক, মসজিদ, ঈদগাহ মাঠ, ব্র্র্যাক প্রি প্রাইমারী স্কুল, মাদ্রাসা, কালী মন্দীরসহ ৬০ পরিবারের বসতভিটা,আবাদি জমি ও আধা কিলোমিটার পাকা সড়ক নদী গর্ভে চলে গেছে। সাতালস্কর গ্রামটি নদীগর্ভে সম্পুর্নরুপে বিলিন হয়ে গেছে।
মাদরাসার সুপার মাওলানা রেফাকাত হোসেন বলেন, পশ্চিম বজরা দাখিল মাদরাসা তিলে তিলে গড়া প্রতিষ্ঠানটি চোখের সামনে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এলাকাবাসীর দাবি রিলিফ চাই না, ভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা চাই।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ভাঙনের তীব্রতার কারণে আপদকালীন প্রকল্পের মাধ্যমে ভাঙন রোধ করা সম্ভব নয়, তবুও আমরা কাজ করছি। ভাঙন রোধে প্রকল্প প্রস্তুত করা হয়েছে, অনুমোদন পেলে স্থায়ীভাবে ভাঙনরোধে কাজ শুরু করা হবে।