শনিবার কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঐতিহ্যবাহী অষ্টমীর স্নান ও মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রায় ৪শত বছর ধরে প্রতিবছর চৈত্র মাসের শুক্ল পক্ষের অষ্টমী তিথিতে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে এই ঐতিহ্যবাহী স্নান উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
হিন্দু ধর্ম মতে এটি একটি পূন্য কর্ম এবং স্নানের স্থানটি তীর্থ স্থান।এবারে পঞ্জিকা হিসাব অনুযায়ী শুক্রবার রাত ৯টা ১১মি.১৬সে.থেকে শুরু
হয়ে শনিবার রাত ১১টা ৮মি.৭সে.পর্যন্ত ছিল স্নানের সময়। তবে স্নানের উত্তম সময়(লগ্ন) ছিল শনিবার সকাল ৭টা ৩৫মিনিট ৩সেকেন্ড থেকে ১০টা ৩মিঃ ৫১সেকেন্ড পর্যন্ত। তবে দুর-দুরান্ত থেকে আসা পূন্যার্থীরা সারাদিনব্যাপী নিজেদের সুবিধামত সময়ে স্নানকার্য সম্পন্ন করেন। হে মহা ভাগ ব্রহ্মপুত্র, হে লৌহিত্য,তুমি আমার পাপ হরণ করো। মন্ত্র উচ্চারণ করে ব্রহ্মার নিকট কৃপা চেয়ে স্নান উৎসবে মেতে উঠেন পূণ্যার্থীরা। প্রায় ৫লাখ পূণ্যার্থীর পদচারনায় মূখরিত হয়ে উঠেছিল চিলমারীর ব্রহ্মপুত্র পাড়ের প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকা। স্নান উৎসবকে ঘিরে কয়েকদিন আগে থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে পূণ্যার্থীর ভিড় জমে চিলমারী বন্দর ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে।রংপুর থেকে স্নান উৎসবে আসা পূন্যার্থী শিউলী রানী জানান,করোনা পরিস্থিতিতে গত ২বৎসর উৎসব করতে পারিনি। এবারে অনেক কষ্ট করে স্নান করতে এসেছি,পরিবেশ ভাল থাকায় স্নান করে তৃপ্তি পেয়েছি। অষ্টমী স্নান উৎসব কমিটির ভাষ্যমতে প্রতি বছরের মত এবারও ভারত, নেপাল ও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অনÍত ৫লাখ পূণ্যার্থী যোগ দিয়েছে স্নান উৎসবে।তবে স্নান উৎসব যদি বুধবার অনুষ্ঠিত হয় তখন ভারত ও নেপাল থেকে বেশি সংখ্যক হিন্দু ধর্মাবলম্বী আসেন বলে কথিত রয়েছে। এদিকে ঐতিহ্যবাহী এই স্নান মেলার জন্য নির্দিষ্ট ঘাট না থাকায় উপজেলার রাজারভিটা এলাকায় উন্মুক্ত স্নানঘাটে পূণ্যার্থীরা স্নানপর্ব সম্পন্ন করেছেন। স্নান উপলক্ষে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়। দুর-দুরান্ত থেকে আসা পূন্যার্থীদের নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশ পুলিশ, র্যাব, আনসার ও ভিডিপির পর্যাপ্ত সদস্য মোতায়েন করাসহ ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে পুলিশী পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। স্নান উৎসব কমিটির আহবায়ক বিষু চন্দ্র বর্মন বলেন, দেশ-বিদেশের প্রায় ৫লাখ পূণ্যার্থী স্নান উৎসবে যোগ দেয়। তিনি আরো জানান,এবারে পরিবেশ অনুকূলে থাকায় আগের তুলনায় পূন্যার্থীর সংখ্যা বেশী হয়েছিল।