বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৫ অপরাহ্ন

ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে,১৫০টি বাড়ি বিলীন হয়েছে,আতঙ্কে বাসিন্দারা

নয়ন দাস ।। কুড়িগ্রামনিউজ২৪.কম / ৪১৭ Time View
Update : বুধবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২

কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে তীব্র ভাঙনের মুখে পড়েছে নদের অববাহিকার বাসিন্দারা। গত দুই সপ্তাহে উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মুসুল্লিপাড়া, সরকারপাড়া, ব্যাপারীপাড়া, রসুলপুর ও বথুয়া তলী গ্রামের প্রায় ১৫০টি বাড়ি ও শত শত বিঘা আবাদি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
ভাঙনকবলিতরা আশ্রয় নিয়েছেন আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি ও খোলা আকাশের নিচে। এছাড়াও তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর বিভিন্ন স্থানে ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছে এসব নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের।
ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনের কবলে শেষ সম্বলটুকুও হারিয়েছেন উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মুসুল্লিপাড়া এলাকার বাসিন্দা ফকির চান (৬০)। তিনি বলেন, ‘গতকাল আমার বাড়ি নদীর পোটোত গেইছে। আমার আর যাওয়ার মতো কোনো স্থান নাই। মানুষের জায়গায় কয়টা টিন দিয়ে ছায়লা করি কোনো রকমে আছি। কোথায় বাড়ি করব, কোথায় যাব, চিন্তায় বাঁচি না।’
ওই এলাকার লতিফ মন্ডল বলেন, কয়েকদিন থেকে নদী খুব ভাঙছে। গাছপালা ফেলেও ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না। আমার বাড়িও ভেঙে গেছে। আমাদের যে কি কষ্ট এখানে না আসলে কেউ বুঝতে পারবে না।
এতো পরিমাণে ভাঙছে আমাদের কান্নাকাটি শুরু হয়েছে।
স্থানীয় কলেজছাত্র আবুল কালাম আজাদ বলেন, ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া ছাড়া আমাদের আর কি বা করার আছে বলুন? শত পোস্ট শত নিউজ করলেও কারও নজরে আসবে না বা কেউ গুরুত্ব দেবে না। কুড়িগ্রামের সবচেয়ে দরিদ্র ইউনিয়ন বেগমগঞ্জ সারাজীবন দরিদ্রই থাকবে। ত্রাণ নয়, টেকসই বাঁধ চান বেগমগঞ্জ ইউনিয়নবাসী। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের ইউনিয়নটিতে সুদৃষ্টি দেওয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ জালাল মিয়া বলেন, নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহে মুসুল্লিপাড়া এলাকার ১৫টি পরিবার ভিটেমাটি হারিয়েছেন। এদের মধ্যে ৩-৪ জনের অবস্থা একেবারেই খুব খারাপ। তাদের যাওয়ার মতো কোনো স্থান নেই। আমরা স্থানীয়রা তাদের থাকার মতো কোনো রকমে স্থান করে দিয়েছি।
বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ বাবলু মিয়া বলেন,আমার ইউনিয়নের বেশিরভাগ অংশ ব্রহ্মপুত্রের তীরে। ভাঙনে গত দুই সপ্তাহে প্রায় ১৫০টি পরিবার ভিটেমাটি হারিয়েছে। প্রায় ৪০০-৫০০ বিঘা জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড শুধু  এক হাজার জিও ব্যাগ দিয়েছেন ব্যাপারীপাড়া গ্রামে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আমি বলেছি- আপনারা কাজ না করেন এসে অন্তত ভাঙনটা দেখে যান।এখানে জরুরিভাবে ব্যবস্থা না নিলে আরও অনেক পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাবে।
উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল কুমার বলেন, বেগমগঞ্জ ইউনিয়নে টিকসই পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করতে হবে।বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তের তালিকা করা হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন জানান,বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন নিয়ে আমরা এমপি মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। সেখানে একটি স্কুলও রয়েছে। দ্রুত সেখানে কাজ করা হবে।


এই বিভাগের আরও খবর
@Site Developed by- NB ALI, Ansari IT
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। কুড়িগ্রামনিউজ২৪.কম- এ প্রকাশিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র ও অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি।