শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ০৪:৩৫ পূর্বাহ্ন
সবশেষ খবর :
কুড়িগ্রামের উলিপুরে এক সড়ক দুর্ঘনায় মৃত শিশুকে নিয়ে এক আবেগঘন স্ট্যাটাস উলিপুরে চিকিৎসা অবহেলায় শিশুর মৃত্যু, উত্তাল হাসপাতাল চত্ত্বর উলিপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে সাবেক বি‌ডিআর (বি‌জি‌বি) সদস্যের মৃত্যু চিলমারীর ধর্ষণ মামলার পলাতক আসামি ঢাকায় গ্রেফতার অনলাইনের জুয়া আসক্তি: আধুনিক যুগের এক নব্য ব্যাধি উলিপুরে পালিত হলো বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস ২০২৫ রাজারহাটে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে মা সমাবেশ ও কুইজ অনুষ্ঠিত উলিপুরে চেতনা ক্লাব ও পাঠাগারের ২০ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন বুড়ি তিস্তা রক্ষায় গ্রীন ভয়েসের মানববন্ধন উলিপুরে উলিপুরে বন্যাদুর্গত ১০০০ পরিবারে জাকাত ফাউন্ডেশনের খাদ্য সহায়তা

কুড়িগ্রামের উলিপুরে এক সড়ক দুর্ঘনায় মৃত শিশুকে নিয়ে এক আবেগঘন স্ট্যাটাস

কুড়িগ্রামনিউজ২৪ ডেক্স।। / ২৭০ জন খবরটি পড়েছেন।।
লিপিবন্ধ করা হয়েছে : শুক্রবার, ৬ জুন, ২০২৫

কুড়িগ্রামের উলিপুরে এক সড়ক দুর্ঘনায় মৃত শিশুকে নিয়ে Nisan Kahn (নিশান খান ) এক আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছে তা নিচে হুবুহ তুলে ধরা হলো।আমি সওদাকে জুস খাওয়াতে পারলাম না।😭😭আমাকে ক্ষমা করে দিও সওদা বোন। 😭আমি তোমাকে বাঁচাতেও পারলাম না তোমাকে কথা দিয়েও  জুস খাওয়াইতেও পারলাম না। 😭😭আজ সাড়ে চারটা থেকে পাঁচটার দিক আমি বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে কায়রা ফাউন্ডেশন থেকে বৃক্ষ রোপন করার লক্ষ্যে ধামশ্রেণীর উদ্দেশ্যে রওনা করি। সরকারি হাসপাতালে রোডটা একদমই জ্যাম।জ্যামের মধ্যেই আমি গাছগুলো নিয়ে যাচ্ছিলাম ঠিক সরকারি হাসপাতালের সামনেই দেখি প্রত্যয় ভাইয়া একটা ছোট মেয়েকে বাইকে করে নিয়ে আসতেছে খুব সিরিয়াস অবস্থা।তখনই আমি জানতে পারি সওদা(৪) অটোর সাথে এক্সিডেন্ট হয়েছে ওর বাসার সামনে ইনদাড়ার পাড়ে।তখন থেকে দ্রুত উলিপুর সরকার হাসপাতালে নিয়ে আসলে, তাৎক্ষণিক ও চিকিৎসা সওদার মিলেনা। সরাসরি বলা হলো ওকে রংপুরে নিয়ে যান। সামান্য ব্লাডটা মুছে দিলো না একটা ব্যান্ডেজ পর্যন্ত করল না। রংপুর নিয়ে যাব হাসপাতালে দেখি হাসপাতালের সরকারি  এম্বুলেন্স। এম্বুলেন্স আছে কিন্তু ড্রাইভার নেই। বারবার ফোন দেয়া হলো ফোন ধরে না। কয়েকবার ফোন দেওয়ার পরে ফোন ধরে বলল আমি যাইতে পারবো না এখানে অনেক জ্যাম হাসপাতালে যেতে সময় লাগবে। তাকে বলা হলো সিরিয়াস অবস্থা আপনি দয়া করে একটু আসেন। ৪ বছরের বাচ্চা একটা আসেন প্লিজ যত টাকা লাগে দেব।তখন সেই ড্রাইভার বলল আপনারা টাকা এতো চিপতেছেন কেন? প্রাইভেট একটা কাড় নিয়ে রংপুরে যান। এখন প্রাইভেট কাড়ে অক্সিজেন কোথায় পাবো বলেন? তখনো কোন গাড়ি পাইতেছিলাম না সওদাকে হাসপাতাল থেকে রংপুরে নিয়ে যাওয়ার জন্য। তখন প্রত্যেয় ভাইয়ার  বাইকে করে সওদাকে নিয়ে পূর্ব মাতার জ্যাম পার হয়ে আমরা গরুহাটি বা জামতলায় যাই।সেখান থেকে একটা প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্স করে সওদাকে নিয়ে থানার মোড় থেকে রংপুর উদ্দেশ্যে রওনা হই। কিন্তু আমাদের থানার মোড় থেকে পোস্ট অফিস যাইতেই ৪০ মিনিট লাগলো। 😭 আমার কথা হচ্ছে আমি যখন সওদাকে কোলে নেই তখন ওর ঘাড় দিয়ে তখনও ওর ব্লাড পড়তে ছিল। সরকারি হাসপাতালে কি প্রাথমিক চিকিৎসা টাও করানো যেত না? অন্তত ব্লাড টা কি মুছে দেয়া যেত না? একটু ডেসিন করে দেওয়া যেত না? কিন্তু ওনারা তা করেনি 😭এমনকি সে এম্বুলেন্স এর ড্রাইভার আসেনি। পরবর্তীতে আমরা গরুহাটি থেকে সওদাকে প্রাইভেট এম্বুলেন্সে তুলি। তখন পর্যন্ত সওদাকে আমি চিনতাম না ওর সাথে কখনও আমার দেখা হয়নি। কিন্তু তারপরও ওকে আমি নিজেই কোলে নিয়ে রংপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হই। কিন্তু আমাদের সেই উন্নতউলিপুর আমাদের সেই গর্বের উলিপুর থানার মোড় থেকে পোস্ট অফিস যাইতে ৪০ মিনিট সময় লাগলো একটা অ্যাম্বুলেন্সে করে। হর্ন সব সময় বাঁচতেই ছিল।কিন্তু কোন সাইট ছিল না যাওয়ার মত। এমনকি গভার মোড়ে কোন প্রশাসনিক কর্মকর্তা কিংবা ট্রাফিক পুলিশ ছিল না। আমি নিজেই জানালা দিয়ে মাথা বের করে দিতে অটো রিক্সা গুলোকে সরতে বলতেছিলাম। তখনো সওদা স্বাভাবিক ছিল। ৪০ মিনিট পর পোস্ট অফিসে একজন ট্রাফিক পুলিশ ছিল তারপরে পোস্ট অফিস দিয়ে আমি রংপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেই। রাজারহাট পার হলাম সওদাও স্বাভাবিক লাগছিল আমার কাছে। তখনো সওদা আমার কোলেই আমার হাতে মাথা দিয়ে আছে আর ওর হাত দিয়ে আমার হাতে চেপে ধরেছে। তারপর সে আস্তে আস্তে কথা বলতে লাগলো আমাকে বলল ভাইয়া আমি জুস খাবো। যে সওদা কখনও আমাকে দেখেইনি সে আমাকে চোখ খুলে বলতেছে ভাইয়া আমি জুস খাবো। আমি ওর হাত ধরে কথা দিলাম যে তুমি এক থেকে পাঁচ গুনো আমি তোমাকে জুস খাওয়াবো। এইতো সামনেই দোকান। তখন আমি ভাবছিলাম আর কিছুক্ষণের মধ্যে আমি হসপিটালে পৌঁছাব।হসপিটালে  গিয়ে ওকে ডাক্তার দেখিয়ে আমি ওকে একটা আগে জুস এই কিনে দিবো। আমারও নিজের কোন বোন নেই। ও আমাকে ভাইয়া বলল। কিন্তু হঠাৎ তিস্তা পার হতেই সওদা বমি করা শুরু করল। প্রথম বমি স্বাভাবিক ছিল। তারপরে বমির সাথে  ব্লাড বের  হওয়া শুরু করল। সওদা জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে ছিল। আমি অক্সিজেন আরো ভালো করে দিলাম। আর বলতেছিলাম সওদা এইতো আমরা এসে গেছি এইতো তোমাকে জুস কিনে দেবো। আপু না ভালো একটু চুপ করে থাকো আমি তোমাকে এখনই জুস কিনে দিচ্ছি। সওদা শান্ত হয়ে গেল। তারপর দেখলাম সাওদা আর নিঃশ্বাস নিচ্ছে না। 😭😭 সবাই ভয় পেয়ে কান্নাকাটি শুরু করলো। সবাইকে ধমক দিলাম যে চুপ করেন ওর কিছুই হবে না। এম্বুলেন্স ড্রাইভার ও বলল ভাইয়া চেক করে নেই নাহলে হাসপাতালে গিয়ে আবার তো ঘুরে আসতে হবে। আমি তাকেও রাগ হলাম যে এত কথা না বলে দ্রুত হসপিটালে যান।তখন সওদা হঠাৎ জোরে জোরে  দুইটা নিশ্বাস নিলো।এই দুই নিশ্বাসেই সওদার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করল। আমি কখনো মানতে পারতেছিলাম না।হাত চেক করলাম, বুক চেক করলাম, কিন্তু সওদা নিঃশ্বাস নিচ্ছে না। তারপর আমি দেখলাম সওদার হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। সওদা আর নিঃশ্বাস নিচ্ছে না। তখন আমাদের এম্বুলেন্স মহিগঞ্জে,উলিপুর  সরকারি হাসপাতালে অবহেলা সরকারি এম্বুলেন্স না পাওয়া এবং উলিপরে জ্যাম না থাকলে আমি হয়তো সওদাকে ঠিক সময় হসপিটালে নিয়ে যেতে পারতাম। আমি বুঝতে পারছিলাম সওদা আর নেই।অ্যাম্বুলেন্স থামায় দেখা গেল সওদা আর নেই। আর আমাদের হসপিটালে যাওয়া লাগতেছে না। 😭😭শেষ নিঃশ্বাস সওদা আমার কোলেই নিল। আমাকে ভাইয়া বলল কিন্তু আমি তাকে জুস খাওয়াতে পারলাম না। 😭😭😭 আজ উলিপুর  সরকারি হাসপাতালের এই অবহেলা, সরকারি এম্বুলেন্স না পাওয়া, এবং উলিপুরের জ্যামের কারণে সওদাকে আমরা হারিয়ে ফেললাম।আমি তাকে বাঁচাতে পারলাম না আমি তাকে জুস খাওয়াতে পারলাম না।😭আমাকে ক্ষমা করে দিও সওদা 😭😭আমি তোমাকে কথা দিয়ে কথা রাখতে পারলাম না 😭😭তোমার ভাইয়া ডাক তোমার চেহারা তোমার লম্বা চুল সবকিছু এখন আমার চোখে ভাসতেছে।😭😭আমি কিছুতেই মেনে নিতে পারতেছি না। এই আফসোস নিয়ে আমি কিভাবে থাকবো। আমি তোমাকে জুস খাওয়াতে পারলাম না 😭😭আমি কিভাবে তোমার এই জুসের ঋণ পরিশোধ করব। 😭😭আমাকে ক্ষমা করে দিও সওদা😭😭আমাকে ক্ষমা করে দিও আমার বোন 😭😭প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দিও  😭😭🙏🙏


এই বিভাগের আরও খবর :
@Site Developed by- NB ALI, Ansari IT
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। কুড়িগ্রামনিউজ২৪.কম- এ প্রকাশিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র ও অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি।